হুজুরের অভিমানী বউ (পর্ব:- ০১)
#গল্প:-হুজুরের অভিমানী বউ
#লেখক:- পিচ্চি লেখক
#পর্ব:- ০১















আমি রাগ করে বাপের বাড়ি চলে এসেছি। আসার আগে একটা চিঠিও লিখে এসেছি যেনো ঐ হনুমানটা আমাকে নিতে না আসে এবং আমাকে যেনো ফোনও না করে। আমি আর ওর সংসারে ফিরে আসবো না
।

এস সব হাবিজাবি লিখে এসেছি আর কিছু শান্তিদায়ক কাজও করে এসেছি। ফ্রীজের সব খাবার ফেলে দিয়ে এসেছি যেনো সে আজ রাতে না খেয়ে থাকে
।

কাল থেকে সে হটেলে খাবে তারপর ওর পেট খারাপ করবে তাই ঔষুধের বক্সটাও লুকিয়ে রেখে এসেছি।
ওর সব শার্ট প্যান্ট ও লুঙ্গিসহ সব কাপড় পানিতে চুবিয়ে রেখে এসেছি যেনো ঐ সব ওর ধুয়ে শুকিয়ে আয়রন করতে কষ্ট হয় আর রাতে ঘুমানোর জন্য যেনো লুঙ্গি না পায়
।

বলে কি না বউ ছাড়াই সে দিব্যি চলতে পারবে! চল এখন একা একা, আমি তো চলেই এসেছি
।

এখানে আসার পর একা এসছি বলে আম্মু এক ঝাড়খানেক প্রশ্ন করলো। যেনো আমি কি না তে কি অপরাধ করেছি।
এমন মা পৃথিবীতে এক পিচই আসে যে নিজের মেয়ের থেকে জামাইকে বেশি বিশ্বাস করে, অসহ্য
!

সারাটা দিন এই সব সাত পাঁচ ভেবেই শেষ করলাম।
সন্ধ্যে হতেই বেশ খুশি লাগছে কারণ এই সময় রেদ্দুর বাসায় ফিরে। আস বাসায় ফিরে দেখবে ওর বউ পালিয়ে গেছে কি মজা
!

পালানো শব্দটা খুব একটা ভালো নয় মনে হয়, তাই পালানোটা বাদ।
আসলে তো আমি রাগ করে এসেছি এটাকে কি পালানা বলে?
বাসায় ফিরে হতভাগাটা লুঙ্গীটাও পানে না, লুঙ্গী পানিতে চুবিয়ে এসেছি।
মাদ্রাসায় যে পায়জামা পরে যেছে সারা রাত হয় সেই পায়জামা পরে থাকতে হবে নয় বস্ত্রহীন, কি মজা!
এই সব ভেবে বেশ শান্তি লাগছে। বউ ছাড়া নাকি ওর দিব্যি চলবে। চল এখন লুঙ্গি ছাড়া
।

রাত আটটা বাজে
সে বাসায় কোনো খাবার পাবে না এমকি বিস্কিটের কৌটোও লুকিয়ে রেখে এসেছি, কি মজা! বলে কি না বউ ছাড়া তার দিব্যি চলবে!
এখন শুধু বউ নয় খাদ্য দ্রব্য ছাড়াও চল
।

নয়টা বাজে
বউ ছাড়া নাকি তার দিব্যি চলবে! চল এখন লুঙ্গি খাবর ঔষধ সব কিছু ছাড়া
।

আমি ছাড়া রাতে ওকে সূরা মুলক তিলাওয়াত করার কথা মনে করিয়ে দিবে কে?
নিজ থেকেই পড়ে নিক এখন থেকে!
রাত দশটা বাজে
এতক্ষণে খালি পেটে ওর পেচে এসিডিটি শুরু হয়ে গেছে।
কিন্তু ঔষধ খুঁজে পাবে না। সারা রাত পেটে এসিডিটি নিয়ে সে নিশ্চই ঘুমাতে পারবে না, কি মজা! বলে কি না বউ ছাড়া ওর দিব্যি চলবে!
এখন পেটে এসিডিটি নিয়ে দারূন করে
চল হতভাগা
।

ফজরের সালাত বাসায় পড়ার জন্য অকে আর কেউ বকা দিবে না!
আমি ছাড়া ও আরামে খাকবে!!
রাত এগারটা বাজে
কিন্তু আমার ঘুম আসছে না।
হঠাৎ মনে হলো ওর ঘুম না হলে ওর ভীষণ মাথা ব্যাথা করে।
ওর মাইগ্রেইন আছে। ইস্ মাথা ব্যাথায় সে খুব কষ্ট পায়। ঔষধ গুলোও লুকিয়ে রেখেছি।
এটা করা বোধ হয় ঠিক হয়নি।
ফোন করে না হয় বলি যে, ঔষুধের বক্স ফ্রীজের পেছনে লুকিয়ে রেখেছি। নাহ থাক বলবো না, বউ ছাড়া যদি ওর চলে তাহলে ঔষধের ব্যবস্থাও করে নিক
।

সে তো একটি বারও আমাকে ফোন করেনী তাহলে আমি কেনো ফোন করতে করবো? বর ছাড়াও আমার দিব্যি চলবে
।

রাত বারোটা বাজে,
মরার ঘুম কেনো আসছে না?
এই এক বছরে ঔ হনুমানটার সাথে থেকে থেকে দেখছি আমার বদ অভ্যাস হয়ে গেছে।
একলা ঘুমই আসছে না!
ধ্যাত্তেরি! সারা রাত কি জেগেই কাতাবো নাকি
?

একটা রাত না হয় জেগেই পার করলাম কিন্তু রোজ যদি ঘুম না আসে তাহলে কি বরবো
?

ওকে তো চিঠিতে লিখেছি যে আর কখনো ফিরে যাবো না।
আর ওকেও নিতে আসতে বারণ করেছি। সত্যিই যদি নিতে না আসে তাহলে আমার কি হবে
?

মান সম্মাদ বিসর্জন দিযে হ্যাংলার মতো তো আর বেচে যেতে পারি না!
কি করতে যে রাগ করে এলাম
? এলামই না হয় কিন্তু টিঠিটা না লিখলেই পারতাম!

অন্য কথা বললে তো উনি এ কানি দিয়ে শোনেন আর ঐ কান দিয়ে বের করে দেন। আর এটার বেলা দেখছি হাদীসের মত পালন করছে
।

আসলে সে আমাকে ভালেই বাসে না।
এক বছর দুই মাস হলো বিয়ে হয়েছে আমাদের আর ঐ ভালবাসাহীন মানুষটার সাথে থেকে কি করে যেনো আমি ভালোবেসে ফেলছি
।

আর সে আমাকে একটুও ভালোবাসেনি!
এসব ভেবে নিজের জন্য দুঃখ পেয়ে কান্না আসছে
।


সব দোষ আম্মুর, আম্মার পছন্দেই আমার বিয়ে হয়েছে।
আমি ঐ হনুমানকটাকে বিয়ে করবো না বলে বিয়ের দিন খুব কেঁদে ছিলাম 

এই সব ভেবে আম্মুর উপর
খুব রাগ হচ্ছে 

#চলবে,,,,,,
{অনুমনি ছাড়া গল্প কপি করা নিষেধ}
★
★★
★★★
★★★★
★★★★★ (ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)
No comments