মর্ডান মেয়ে যখন হুজুরের প্রেমে (পর্ব:- ০৫ ও শেষ)
#গল্প:- মর্ডান মেয়ে যখন হুজুরের প্রেমে
#লেখক:- পিচ্চি লেখক
#পর্ব:- ০৫ ও শেষ















সুমাইয়া:- হুম। যে করেই হোক আমার আসিফ কে চাই। তার জন্য আমার যা করতে হবে আমি তাই করব।
এইভাবে তারা ভাবছে আমাদেরকে কিভাবে নিজের করে পাবে। একটু পর স্যার আসলেন এবং ক্লাস নেওয়া শুরু করলো। এভাবেই একটা একটা করে সবগুলো ক্লাস শেষ হয়ে গেল। তারপর আমরা ক্লাস শেষ করে বের হব এমন সময় নিলা আর সুমাইয়া আমাদর পথ আটকে দাড়াল এমং বলল-
নিলা:- যে করেই হোক আমরা তোমাদেরকে নিজের করে নিবোই।
আমি:- আগে আপনাদের কে শর্ত গুলো পূরণ করতে হবে তারপর আমাদের বিয়ে।
এই বলে আমি আর আবির বাসায় চলে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে। দোকানে গেলাম কাজে। গোকান থেকে সন্ধায় বাসায় আসলাম। এসে রান্না বসিয়ে এশার নামাজ পরতে গেলাম। নামাজ পরে এসে রাতের খাবার খেয়ে পড়া শুরু করলাম। পড়া শেষ করে ঘুমিয়ে গেলাম। পরের দিন কলেজে গেলাম কলেজ শেষ করে বাসায় আসলাম। এইভাবেই আমাদের দিন যাচ্ছে।
কয়েক দিন পরে আমি আর আসিফ কলেজ ক্যাম্পাসে বসে গল্প করছিলাম। এমন সময় আমাদের সামনে দুইজন বোরকা পড়া মেয়ে এসে আমাদের সালাম দিল।
নিলা:- চিনতে পেরেছেন আমাদের?
আমি: নাতো কে আপনারা?
নিলা: আমি তোমার নিলা।
সুমাইয়া: আর আমি সুমাইয়া।
নিলা:- এখন তো আমাকে ভিরিয়ে দিও না। আমি তোমায় অনেক ভালো বাসি আবির।
আমি:- দেখো নিলা আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি বিয়ের আগে প্রেম হারাম। সো আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না। তুমি রাজি থাকলে তোমাকে বিয়ে করতে রাজি আছি।
নিলা তো খুশিতে আত্তহারা।
নিলা:- আমি রাজি।
আমি:- তোমার বাড়ির ঠিকানা দাও বিয়ের প্রস্তাব পাঠাব। আর সুমাইয়ার বাড়িরর ঠিকানাটাও দাও।
আপনাদের তো বলাই হয় নি। আসলে আমি নিলাকে ভালোবাসে ফেলছি কিন্তু আমি বিয়ের আগে প্রেম করে গুনাহ করতে পারবো না। আসিফ সুমাইয়াকে ভালোবাসে।
নিলা:- ওকে এই নাও ঠিকানা।
একটা কাগজে লেখে দিল।
কলেজ শেষ করে বাসায় গিয়ে আমি আর আসিফ নিলা ও সুমাইয়ার বাবার সাথে দেখা করতে গেলাম একটা রেস্টুডেনটে।
আমি:- আসসালামু আলাইকুম।
নিলার বাবা: ওলাইকুম আসসালাম।
দেখে মনে হলো নিলা আর সুমাইয়ার বাবা ইসলাম প্রিয় মানুষ ইসলামরে জ্ঞান আছে কারণ তাদের মুখে সুন্নাতি দাড়ি।
নিলার বাবা:- তা বাবা কেমন আছো তোমরা।
আমি:- জ্বি আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন।
নিলার বাবা:- আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোমদের কথা নিলা আমাকে বলেছে। আমিও চেয়েছিলাম আমার পাগলি মেয়ে কে কোন একটা দ্বীনদার ছেলের সাথে বিয়ে দিব।
সুমাইয়ার বাবা:- শুধু নিলা নায় সুমাইয়াও আসিফের কথা আমাকে বলেছে। আমি রাজি আছি ওর সম্মতিতে কারণ জীবনটা ওর। ওর পছন্দই আমার পছন্দ।
নিলা ও সুমাইয়ার বাবা:- তো বাবা বিয়ে মোহরের ব্যাপারে একটু আলোচনা করি। আমার ইসলাম সম্পর্কে একটু বুঝি তাই তেমাদের সামর্থ অনুযায়ি যেটা বলবে আমরা সেটাটেই রাজি।
আমি আর আসিফ:- আঙ্কেল আমারা ১০০০০ টাকা দিতে পারবো। এর বেশি আমাদের সামর্থ নেই।
নিলা ও সুমাইয়ার বাবা:- আচ্চা বাবা ঠিক আছে। আমি নিলাকে বলব বাসায় গিয়ে। তা বাবা বিয়ের দিনটা কবে নেওয়া যায়?
আমি আর আসিফ:- আঙ্কেল শাওয়াল মাসে বিবাহ করা সুন্নাত তাই আমি চাই এই আরবী মাসের আগামী ২১ তারিখ রোজ শুক্রবার বিবাহ ।
নিলা ও সুমাইয়ার বাবা:- আচ্ছা বাব ঠিক আছে।
আমি: আঙ্কেল আমাদের কিছু আবদার আছে।
নিলা ও সুমাইয়ার বাবা:- কি আবদার বাবা তোমরা কি যৌতুক চাচ্ছ?
আমি:- না আঙ্কেল আমারা চাই দুই বিবাহ টা একজায়গাতেই হবে। আমাদের পক্ষ থেকে শুধু আমারা দুইজন বর ও দুইজন সাক্ষী নিয়ে যাব। আর গায়ে হলুদ সমাজে যে প্রচলিত কুসংসকার গুলো আছে এই গুলো আমাদের বিয়েতে করা যাবে না।
নিলা ও সুমাইয়ার বাবা:- কিন্তু বাবা কেন।
আমি:- কারণ এই কুসংস্কার গুলো ইসলাম সমর্থন করে না। আর হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন ঐ বিয়েতে বরকত বেশি যে বিয়েতে খরচ কম।
[আজ সমাজে একটা মেয়ের বিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়না যৌতুকের কারণে। যৌতুকের কারনে পারিপারিক সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। আমি আমার যুবক ভাইদের বলছি তুমি কি ভাবে যৌতুক চাও। শশুর বাড়ি থেকে যৌতুক খাওয়া যে কথা পায়খানা খাওয়া একই কথা। যৌতুক যদি নিতেই হয়ে তা হলে বিয়ের আগের দিনে তোমার দুই হাত কেটে ফেলে দিও। আল্লাহ তোমার হাতের বাহু দিয়েছে যাতে তুমি আল্লাহর ইবাদত করতে পার এবং কিছু উপর্জন করতে পারো। ইসলামী শরয়ায় বিয়ের পর একটি মাত্র অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন যেটা হবে ছেলের বাড়িতে। অথচ আমরা বিয়ের সময় হাজার হাজার লোক নিয়ে যাই শশুর বাড়িতে এটা শশুরে উপর একটা জুলুম। আর অনেক মেয়ের বাবা আছে যারা দেনমহর চান। ১, ২, ৫, ১০ লক্ষ টাকা। মানে আমাদের সামাজে যার বিয়েতে ছেলে যত বেশি দেনমহর দিতে পারবে আর সম্মান মর্যাদা তত বেশি। অথচ নবী (সাঃ) বলেছেন ঐ বিয়ে বরকত ময় যে বিয়েতে খরচ কম। তো যাইহো এই বিষয় গুলো নিয়ে আগামীকে একটা বড় লেখা দিব ইন শা আল্লাহ।]
নিলা ও সুমাইয়ার বাবা:- আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।
দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ে হয়ে গেল আর আমরা বাসা পরিবর্তন করে দুইতালা একটা বাসা ভারা নিয়েছি কারণ বিয়ের পর আমাদের উপার্জনও বেশি হয়ে গেছে।
আজ আমার বাসর রাত। দরজার সামনে দাড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পরে বাসর ঘরে ঢুকলাম। তারপর দরজা লাগালাম। পিছনে ভিরতেই দেখি নিলা আমায় ছালাম করবে তখনই আমি ওকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরলাম তারপার আমি বললাম-
আমি:- অনেক অনেক ভালোবাসি তোময়।
নিলা:- সত্যি হুম।
এই বলে ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি: তোমার অযু আছে।
নিলা:- হুম আছে।
আমি:- চল দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমাদের সংসার যেন সুখি হয়।
নিলা:- হুম চলে।
আমি:- নামাজ শেষ করে সুমাইয়াকে কোলে তুলে বিছানায় বসালাম তারপর ওকে ওর দেনমোহরের সব টাকা বুঝিয়ে দিলাম। আর বললাম- এই নাও তোমার দেনমোহরের টাকা।
[সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা বাসর রাতে বউয়ের কাছে থেকে দেনমোহরের টাকা মাফ চেয়ে নেয় । স্ত্রি ব্যাচারা আর কি করবে যদি মাফ না করে প্রথম দিন স্ত্রী ভয়ে মাফ করে নেয়। কিন্তু না বোন দেনমোহর দেওয়া তোমার অধিকরার ইসলাম এই অধিকার তোমাকে দিয়েছে।]
নিলা:- এত টাকা দিয়ে আমি কি করব?
আমি: তোমার ইচ্ছা নিলা। দেনমোহর দেওয়া ফরজ তাই দিয়ে দিলাম।
তারপর আমি নিলার নিকাবটা খুললাম ও আল্লাহ আমি এটা কাকে দেখছি যেন জান্নাতের হুর। আর বাকি টুকু ইতিহাস।।। আর বাকি ইতিহাস টুকু চাহিয়া আমাকে লজ্জা দিবেন না।
হারামে কখনও আরাম নেই তাই প্রিয় দ্বীনি ভায়েরা একটা চাকুরির ব্যবস্থাকরে বিয়ে করে ফেলেন। হারাম প্রেম রিলেশন নামক জিনার ভিতর না থেকে।
#সমাপ্ত,,,,,,
{অনুমনি ছাড়া গল্প কপি করা নিষেধ}
★
★★
★★★
★★★★
★★★★★ (ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)
No comments