হুজুরের অভিমানী বউ (পর্ব:- ০২)
#গল্প:- হুজুরের অভিমানী বউ
#লেখক:- পিচ্চি লেখক
#পর্ব:- ০২















এক বছর দুই মাস হলো বিয়ে হয়েছে আমাদের আর ঐ ভালবাসাহীন মানুষটার সাথে থেকে কি করে যেনো আমি ভালোবেসে ফেলছি
।

এসব ভেবে নিজের জন্য দুঃখ পেয়ে কান্না আসছে
।


সব দোষ আম্মুর, আম্মার পছন্দেই আমার বিয়ে হয়েছে।
আমি ঐ হনুমানকটাকে বিয়ে করবো না বলে বিয়ের দিন খুব কেঁদে ছিলাম 

এই সব ভেবে আম্মুর উপর
খুব রাগ হচ্ছে 

এখনই আম্মুকে ডেকে এর হেস্ত নেস্ত করেই ছাড়বো
।

কিন্তু এড রাতে ঘুম থেকৈ ডাকা বোধ হয় ঠিক হবে না।
সকাল হোক এর হেস্ত নেস্ত করেই আমি ছাড়বো
।

রাত একটা বাজে, হনুমানটা ঘুমিয়েছে কিনা কে জানে।
ওর মনে হয় খুব খিদে পেয়েছে। না খেয়ে এতক্ষণে ওর পেটে এসিডিটি শুরু হয়েছে মনে হয়। এসিডিটি নিয়ে ওর মনে হয় ঘুম আসছে না
।

তাহলে একক্ষণে ওর মাইগ্রেইন শুরু হয়েছে।
একবার ফোন করবো? না থাক, ওর তো বউ ছাড়া দিব্যিই চলবে।
সে তো পারতো একটি বার আমাকে ফোন করতে! কিন্তু করেনী, মানুষ কত খারাপ হলে নিজের বউয়ের খোঁজ নেয় না!
এই সব স্বামীদের পুলিশে দেয়া উচিত।
রাত দুইটা- তিনটা- চারটা- পাঁচটাও শেষ এখন ছয়টা বাজে।
সারাটা রাত একটি মিনিটও ঘুমাইনী। ওকে শিক্ষা দিতে গিয়ে আমি নিজেই শিক্ষাত হয়ে গেছি।
এখন তো দেখছি ওর বউ ছাড়া দিব্যিই চলছে কিন্তু আমারই বর ছাড়া চলছে না! এসব ভেবেই কান্না পাচ্ছে
।

সাতটা বাজে, হনুমানটাকে না ডাকলে তো ওর ঘুম ভাঙ্গে না।
তাহলে মাদ্রাসায় যাবে কি করে? একবার ফোন করে ডেকে দিই না হয়। না থাক, ওর তো বউ ছাড়াই দিব্যি চলবে তাই মাদ্রাসাটাও চালিয়ে নিক
।

সকাল আটটা বাজে, সে ঘুম থেকে উঠলো নাকি সারা রাত মাইগ্রেইন নিয়ে বসে ছিল কে জানে! অফিসে লেটে পৌছালে মাদ্রসার মুহতামিমের কথা শুনতে হবে।
এক বার না হয় ফোন করে বলি। না থাক, বউ ছাড়া তো ওর দিব্যি চলবে, এখন বউ ছাড়া হুজুরের ঝাড়ি খেয়ে চলুক।
খালি পেটে ঝাড়ি খেয়ে পেট ভরুক মহাপুরুষের
।

ধ্যাত্তেরী! কিচ্ছু ভাল্লাগছে না।
একটি বার আমাকে ফোন করলে কি হয়? আজব মানুষ একটা! সব দোষ আম্মুর, এমন কেয়ারলেস ছেলেকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছে।
এখনই আম্মুর সাথে বোঝা পড়া করবো। আম্মুর রুমে গিয়ে বললাম-“তুমি পৃথিবীতে আর কোনো ছেলে খুঁজে পাওনী আমার গলায় ঝুলানোর জন্য
?

[বিঃ দ্রঃ গল্পে নাইকার নাম নিলা ও নায়কের নাম রোদ্দুর দেওয়া হয়েছে ]
নিলার আম্মুঃ- কেনো কি হয়েছে?
নিলাঃ- রাগে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বলল-এমন ছেলের সাথে আমাকে বিয়ে দিয়েছো যে ছেলে আমাকে ভালোই বাসে না।
নিলার আম্মুঃ- ওমা তাই নাকি? কিন্তু রোদ্দুর তো বললো তুই নাকি ওকে ভালবাসিস না।
নিলাঃ- ঐ হনুমানটা তাই বলেছে? তো এতই যখন ভালোবাসে তাহলে কাল থেকে একটি বারও আমাকে ফোন করে আমার খোঁজ নেয়নি কেনো?
নিলার আম্মুঃ- সে তো বলল তুই নাকি বারণ করেছিস।
নিলাঃ- সে তোমাকে ফোন করেছিল?
নিলার আম্মুঃ- হ্যা, রাতেই ফোন করেছিল।
নিলাঃ- কই আমকে তো বলোনি?
নিলার আম্মুঃ- তুই তো বললি তোর আব্বুর জন্য তোর মন কেমন করছিল তাই এসেছিস। ঝগড়া করে এসেছিস সেটা তো বলিসনি!
নিলাঃ- এটা বলার কি আছে?
ঐ হনুমানের অত্যাচারেই তো আসতে বাধ্য হয়েছি।
নিলার আম্মুঃ- সে জন্যই ভাবছি তোকে আর ওখানে ফিরে যেতে হবে না!
নিলাঃ- কেনো
?

নিলার আম্মুঃ- ভাবছি তোকে ডিভোর্স করিয়ে আবার বিয়ে দেবো!
নিলাঃ- এই.....এই আম্মু তুমি আমার সংসার ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছো নাকি
?

নিলার আম্মুঃ- তুই তো বললি রোদ্দুর তোকে অত্যাচার করে? তাই ডিভোর্স করিযে রোদ্দরেকেও একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে দিবো!
নিলাঃ- কি বললে? আমি ভালো মেয়ে নই? আমার স্বামীকে আবার বিয়ে দিবে
? এই তুমি আসলেই আমার নিজের মা তো? আমার ডাউট হচ্ছে
!


নিলার আম্মুঃ- তুই তো তোর স্বামীকে ভালোবাসিস না।
নিলাঃ- কে বললো তোমাকে?
নিলার আম্মুঃ- তোর ভাব ভঙ্গি তো তাই বলছে।
নিলাঃ- তাই বলে তুমি আমার সংসার ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করবে
? এই তুমি নিশ্চিই আমার নিজের মা নও। বলো আমার মাকে কোথায় গুম করে রেখে আমার বাবাকে বিয়ে করেছো
?


এবার নিলার আম্মু বেশ রেগে গিয়ে বললো!
নিলার আম্মুঃ- ফালতু কথা বলবি না নিলা
।

নিলাঃ- আমার সংসার ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করে আমার স্বামীকে বিয়ে দেতে চাইছো, এটা কোনো নিজের মা করতে পারবে?
নিলার আম্মুঃ- তোর মাথার তার ঢিলা তার খুলে পড়ে গেছে।
নিলাঃ- কে বললো
?

নিলার আম্মুঃ- ছোট বলা থেকেই আমাকে জ্বালিয়ে ছাই কয়লা এই সব করেছিস, এখন আবার ঐ সরল ছেলেটার পেছনে লেগেছিস; এই তুই বড় হবি না কখনো?
নিলাঃ- কি আমি খারাপ আর ঐ হনুমানটা সরল? সে যদি সরল হয় তাহলে গোটা পৃথিবীতে জটিল কে
?

নিলার আম্মুঃ- ছেলেটা তোর জন্য না খেয়ে অসুস্থ হয়ে গেছে আর ঐ শরীরেই মাদ্রাসায়ও গেছে তা কি বলবো আমি?
নিলাঃ- এতক্ষণ পরে এসব বলছো? এই তুমি আসলেই আমার মা তো
?

নিলার আম্মুঃ- আবার বাজ কথা বলছিস?
নিলাও রাগ দেখিয়ে নিলার রুমে চলে এসে নিলার লাগেজ গোছানো শুরু করলো।
তারপর নিলা বেরিয়ে যেতে দেখে নিলার আম্মু বললো- কোথায় যাচ্ছিস?
নিলাঃ- স্বামীর বাড়ি যাচ্ছি!
নিলার আম্মুঃ- তোর গলায় না আমি হনুমান ঝুলিয়েছি? তাই যেতে হবে না।
নিলাঃ- আমার কাজ আছে যেতেই হবে।
নিলার আম্মুঃ- কি কাজ আছে?
নিলাঃ- ইয়ে মানে......!! ফুলের টবে পানি দিতে হবে!
নিলার আম্মুঃ- এই কাজ করতে চলে যাচ্ছিস?
নিলাঃ- হ্যা আমি এখানে থাকি আর তুমি আমার স্বামীকে বিয়ে দাও।
আর আমি যেয়ে দাওয়াত খাই!
নিলার কথা শুনে নিলার আম্মু অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে
।

নিলা বাসায় পৌছে দেখে ওর কাপড় গুলো পানিতেই ডুবে আছে, সাথে নিলার গুলোও চুবে আছে
।

হনুমানটা এই ভাবে শোধ নিছে দেখে খুব রাগ হচ্ছে।
নিলা কাপড় গুলো শুকিয়ে আয়রন করে, রান্না করলো।
ঘরটাকে এক রাতেই ম্যাস বাড়ি বানিয়ে রেখে গেছে, সব কিছু গোছগাছ করলো নিলা।
রাত আটটা বাজে তবুও রোদ্দুর বাসায় ফেরার খবর নেই
!

নিলা বাপের বাড়ি গেছে দেখে এই সুযোগে আবার কোনো বান্ধবীর বাসায় যায়নী তো? না না রোদ্দুর এমনটা করবে না, মুখে যা-ই বলুক না কেনো সে আমাকেই ভালোবাসে।
কিন্তু পুরুষ মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই। রুমে লাইট অফ করে বিছানায় শুয়ে থেকে এই সব হাবি জাবি ভাবছে। হঠাৎ দরজায় আওয়াজ পেলো নিলা।
বুললাম হনুামানটা এসেছে।
নিলাও ঘুমের ভান করে ঘোপটি মেরে শুয়ে থাকলো।
রোদ্দুর রুমে এস লাইট অন করে চিৎকার করে উছলো।
আমিও অপ্রস্তুত ভাবে লাফ দিয়ে বসে ওর সাথে চিৎকার করতে শুরু করলাম। ভাবলাম রুমে হয়তো সাপ পোকা মাকড় কিছু একটা দেখে সে চিৎকার করছে 

রোদ্দুর চিৎকার থামিয়ে বললো- এই আপনি কে 


এক দিনের মধ্যে কি এমন ঘটলো যে সে আমকে চিনতে পারবে না?
মাইগ্রেইনে কি তবে ওর মাথা খারাপ হয়ে গোলো নাকি?
নিলাঃ- “রোদ্দুর তুমি আমাকে চিনতে পারছো না
?

আমি তোমার নিলা”
#চলবে,,,,,,
{অনুমনি ছাড়া গল্প কপি করা নিষেধ}
★
★★
★★★
★★★★
★★★★★ (ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)
No comments