মর্ডান মেয়ে যখন হুজুরের প্রেমে (পর্ব:- ০৪)
#গল্প:- মর্ডান মেয়ে যখন হুজুরের প্রেমে
#লেখক:- পিচ্চি লেখক
#পর্ব:- ০৪















একটু পরে স্যার ক্লাসে আসলো ওরা ওদের বেঞ্চে চলে গেল। তারপর স্যার ক্লাস নেওয়া শুরু করলো। ক্লাস শেষ করে আমরা দুইজন বের হবে যাব এমন সময় নিলা ও সুমাইয়া আমাদের সামনে এসে পথ আটকে দাঁড়াল। আমি বললাম-
আমি:- কি ব্যাপার আমাদের পথ আটকিয়ে দাঁড়ালেন কেন? সরুন।
নিলা:- সরতে পারি যাদি তোমরা আমাদের সাথে বন্ধুত্ব কর।
আমি:- তখন তো বললাম আমরা আপনাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারবো না।
নিলা:- জানো কলেজের সব ছেলেরা আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য পাগল হয়ে আছে। আর আমরা নিজেরা তোমাদের কাছে আসলাম বন্ধুত্ব করতে তাও তোমরা বন্ধুত্ব করতে চাচ্ছো না।
আমি: সবার মত আমরা পাগল না। সরেন আমাদের কে যেতে দেন কাজ আছে।
এই বলে আমি আর আসিফ পাশ কেটে চলে আসলাম। ঐদিকে সুমাইয়া বলছে---
নিলা:- যে করেই হোক তোমাদের সাথে বন্ধুত্ব করেই ছাড়ব।
সুমাইয়া:- হুম করবই।
কিছুদিন পর থেকে আমাদের টেষ্ট পরিক্ষা তাই আমরা দুজন পরিক্ষার আগে কয়েক দিন কলেজে না গিয়ে বাসাতেই পড়াশোনা করলাম।
ঐদিকে আমরা কয়েক দিন কলেজে না যাওয়ায় নিলা ও সুমাইয়া তো চিন্তায় শেষ। ওরা মনে করেছে আমরা আর কলেজে আসবো না। ওরা ভাবছে ওদের জন্যই আমরা আর কলেজে যাব না। ও যদি না আসে তাহলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না। এদিকে সুমাইয়াও একই কথা ভাবছে। এই দিকে পরিক্ষার দিন চলে আসলো। নিলা ও সুমাইয়া দরজার দিকে তাকিয়ে আছে যদি ওরা আসে।
কিছুক্ষণ পরে আমি আর আসিফ এসে পরলাম। আমাদের দেখে নিলা আর সুমাইয়া তো অনেক খুশি।
পরিক্ষা শেষে লাইব্রেরিতে গিয়ে ইসলামিক বই পরছিলাম। এমন সময় খেয়াল করলাম আমার পছনে কেই দারিয়ে আছে। আমি পিছনে না তাকিয়ে পড়ায় মনোযোগ দিলাম। হঠাৎ করে নিলা বলল-
নিলা:- এইযে হুজুর, আমাকে একটা বই দেও তো?
আমি:- উপরে আছে গিয়ে নিয়ে নিন।
তারপর পিছনে তাকিয়ে দেখলাম নিলা অনেক শুকিয়ে গেছে চেহারাতেও আগের মত আর সেই উজ্জলতা নেই। তারপর নিলা চলে গেলো। যাওয়ার সময় আমাকে বলল-
নিলা:- আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না আবির।
এই কথা বলে নিলা চলে গেল। ও যে কি বলে গেল আমি কিছুই বুঝলাম না। তারপর আসিফ আমার কাছে আসল। কিছুক্ষণ পরে আমি আর আসিফ বাসায় চলে আসলাম।
দেখতে দেখতে সব পরিক্ষা শেষ হয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ সবগুলো পরিক্ষাই অনেক ভালো হয়েছে। কলেজ ১০ দিন বন্ধ দিল । আসিফকে বললাম চল কোথাও থেকে ঘুরে আসি ও রাজি হল। দুই ভাই চলে গেলাম কুয়াকাটা ও কক্সবাজারে দুই জায়গায় ঘুরবো। একজায়গায় ১০ দিন করে দুই জায়গায় ২০ দিনে অনেক জায়গা ঘুরলাম অনেক মজা করলাম।
আর ঐদিকে নিলা আর সুমাইয়া কলেজ খোলার পরও আমরা আসলাম না দেখে চিন্তায় শেষ। ওরা তো কান্না করতে করতে শেষ। নিলা সুমাইয়াকে জিজ্ঞাস করে-
নিলা:- কিরে সুমাইয়া কি ভাবসিছ।
সুমাইয়া:- আমি আসিফ কে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু ও তো আর এল না। আসিফ কি বোঝে না যে আমি ওকে ভালোবাসি।
নিলা:- সুমাইয়া আমিও আবির কে অকেন ভালোবাসি। কলেজের সবচেয়ে ভদ্র ছেলে আবির। কত সুন্দর চেহারা। দেখতে কত কিউট। কত সুন্দর করে কথা বলে।
সুমাইয়া:- আসিফ আসলে আমি আসিফকে আমার মনের কথা বলে দিব।
নিলা:- আমিও সেই অপেক্ষায় আছি। আবির আসলে আমিও আমার মনের কথা আবিরকে খুলে বলব।
ঘুরে বাসায় আসার পর পরের দিন। ফজরের নামাজ পরে এসে বাসায় পড়তে বসলাম। পড়তে পড়তে ৮ টা বেজে গেল। তারপর নাস্তা করে আমরা দুইজন কলেজে গেলাম। যখন আমরা গেট দিয়ে কলেজে ঢুকব তখনি আমার সাথে যা ঘটল সেটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
নিলা দৌরে এসে আমাকে জরিয়ে ধরল আর সুমাইয়া আসিফ কে জরিয়ে ধরেছে।
আমি নিলার থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে পেছনে সরে গেলাম আর আবির সুমাইয়াকে ছাড়াতেই পারছে না। আমি নিলাকে বললাম-
আমি:- আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন কেন?
নিলা:- আবির তুমি এতদিন কোথায় ছিলে। তোমার কিছু হয়নি তো। যানো আমি কত চিন্তায় ছিলাম তুমি ১০ দিন কলেজে আসোনি এই জন্য।
আমি:- আমার কাজ ছিলো তাই আসিনি। আর আমার মত ছোটলোকের জন্য কে আপনাকে চিন্তা করতে বলেছে?
নিলা:- চুপ। কথায় কথায় আমাকে আর লজ্জা দিও না। তুমি বুঝ না আমি কেন তোমার জন্য এত চিন্তা করি?
আমি:- কি বুঝব?
নিলা:- আমি তোমকে একটা কথা বলতে চাই আবির?
আমি:- কি বলবেন বলেন?
নিলা:- I Love You Abir. আমি তোমাকে ভালোবাসি আবির। অনেক ভালোবাসি। তুমি এতদিন আসো নি জানো আমি কত চিন্তায় ছিলাম। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিয় না।
এই বলে নিলা আমাকে জড়েয়ে ধরল। আমি অনেক অবাক হলাম নিলা কিনা আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু না আমি ওকে ভালোবাসতে পারব না। আমি নিলাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম-
আমি:- কি শুরু করছেন আপনি এগুলো। আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না। কারণ ইসলামী শরিয়তে বিয়ের আগে প্রেম হারাম। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন- আর তোমরা যিনা-ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (সূরাঃ বনী-ইসরাঈল, আয়াতঃ ৩২)।
তাই আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না।
নিলা:- কেন আবির? তুমি আমাকে ভালোবাসবে না। আমার মধ্যে কি নেই। কলেজের সবাই আমার পিছনে ঘুরে। আর আমি তোমাকে নিজে ভালোবাসার কথা বললাম আর তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছ। আমি কি দেখতে কম সুন্দরী।
আমি;- Shut up Mst. Nila. অন্যরা ঘুরতে পারে। কিন্তু আমি ঘুরব না। আর সৌন্দর্য নিয়ে আপনি এত অহংকার করেন কেন। সৌন্দর্য আমার কাছে কোন বিষয় না। আমার কাছে ভালো মন থাকা বিষয়। আমি যাকে বিয়ে করবো তাকে আল্লাহকে ভালোবাসতে হবে। রাসুল (সাঃ) কে ভালোবাসাতে হবে। সব সময় পর্দা করতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে। ইসলামের বিধি বিধাম মানতে হবে। পারবেন এই সব মানতে?
নিলা:- পারব। আমি তোমার জন্য সব করতে পারবো। আমি শুধু তোমাকে চাই। এর জন্য আমাকে যা করতে হবে আমি তাই করব। তাও আমি তোমাকেই চাই।
আমি:- ওকে, দেখি কেমন পারেন।
এই বলে আমি আসিফ কে নিয়ে চলে আসলাম। তারপর ক্লাসে এসে বসলাম। তারপর রিদয় আর উজ্জল আমাদের কাছে আসল। এসেই জিজ্ঞাস করল---
রিদয়:- কিরে আবির, আসিফ তোদের ওরা কি বলল।
তারপর আমি ওদের সব বললাম। তখন রিদয় বলল--
রিদয়”- দোস্ত যেখানে কলেজর সব ছেলেরা ওদের পিছনে ঘুরত। আর সেখানে কিনা ওরাই তোদের ভালোবাসে। সত্যিই তোরা অনেক লাকি।
আমি:- কিন্তু আমরা ওদের কে কিছু শর্ত দিয়েছি। সেই শর্ত যদি ওরা পূরণ করতে পারে তাহলে আমরা ওদেরকে বিয়ে করব। জানি ওর এই শর্ত মানতে পারবে না।
রিদয়:- দেখি কি হয়। আমার তো মনে হচ্ছে ওরা পারবে।
আমি:- হুম দেখব কেমন মানতে পারে।
তারপর আমরা গল্প করছিলাম। একটু পর নিলা ও সুমাইয়া ক্লাসে আসর। এস আবিরের দিকে তাকিয়ে নিলা ভাবতে লাগল যে করেই হোক তোমকে আমার নিজের করে নিবোই। তারপর নিলা সুমাইয়াকে বলল-
নিলা:- আমাদের দুইজন কে যে করেই হোক আবির আর আসিফের পছন্দ মত কাজ করতে হবে। এখন থেকে আমরা ইসলামী নিয়ম মেনে চলব। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ব।
সুমাইয়া:- হুম। যে করেই হোক আমার আসিফ কে চাই। তার জন্য আমার যা করতে হবে আমি তাই করব।
এইভাবে তারা ভাবছে আমাদেরকে কিভাবে নিজের করে পাবে। একটু পর স্যার আসলেন এবং ক্লাস নেওয়া শুরু করলো। এভাবেই একটা একটা করে সবগুলো ক্লাস শেষ হয়ে গেল। তারপর আমরা ক্লাস শেষ করে বের হব এমন সময় নিলা আর সুমাইয়া আমাদর পথ আটকে দাড়াল এমং বলল-
নিলা:- যে করেই হোক আমরা তোমাদেরকে নিজের করে নিবোই।
আমি:- আগে আপনাদের কে শর্ত গুলো পূরণ করতে হবে তারপর আমাদের বিয়ে।
এই বলে আমি আর আবির বাসায় চলে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে। দোকানে গেলাম কাজে। গোকান থেকে সন্ধায় বাসায় আসলাম। এসে রান্না বসিয়ে এশার নামাজ পরতে গেলাম। নামাজ পরে এসে রাতের খাবার খেয়ে পড়া শুরু করলাম। পড়া শেষ করে ঘুমিয়ে গেলাম। পরের দিন কলেজে গেলাম কলেজ শেষ করে বাসায় আসলাম। এইভাবেই আমাদের দিন যাচ্ছে।
কয়েক দিন পরে আমি আর আসিফ কলেজ ক্যাম্পাসে বসে গল্প করছিলাম। এমন সময় আমাদের সামনে দুইজন বোরকা পড়া মেয়ে এসে আমাদের সালাম দিল।
#চলবে,,,,,,
{অনুমনি ছাড়া গল্প কপি করা নিষেধ}
★
★★
★★★
★★★★
★★★★★ (ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)
No comments